জাতীয় রাজস্ব বোর্ড : ঐক্য পরিষদ এর সভাপতিসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা!

আসাদুজ্জামান রনজু
৩০ জুন, ২০২৫, 5:24 PM

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড : ঐক্য পরিষদ এর সভাপতিসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা!
ঐক্য পরিষদের নেতাদের শাটডাউন ঘোষণা কড়ায় চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান ক্ষিপ্ত হয়ে ষড়যন্ত্র মূলক এ মামলা দায়ের করেন বলে দাবি করেন ঐক্য পরিষদ সংশ্লিষ্টরা। যে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে- তারা হলেন, আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম; নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ( সভাপতি); ঢাকা-৮ কর অঞ্চলের অতিরিক্ত কমিশনার মির্জা আশিক রানা (সহ সভাপতি); ঢাকা কর অঞ্চল-১৬ অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা; ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ড এবং বিএসএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান।
তবে আন্দোলনকারী সকলের মূখে একটিই কথা, তাহলে সরকার কি ফ্যাসিস্টদের কায়দায় এগোচ্ছে?যে রকম ফ্যাসিস্ট আমলে ন্যায্য দাবী নিয়ে কথা বললেই এধরণের খড়ক দিয়ে হয়রানি করা হতো। তবে, এনবিআর সূত্র বলছে ভিন্ন কথা।
এনবিআরে সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে গত ১২মে পর থেকে আন্দোলন করছেন সকল কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। ফলে সরকারের হয়ে রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটিতে তৈরী হয়েছে এক ধরনের অচলাবস্থা। এতে ব্যবসায়ী, রাজস্ব তথা জনসাধারণের সেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে প্রতীয়মান হয়।
এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করেছিল সরকার। তাতে করে, করহার নির্ধারণ এবং কর আদায়ের কাজ আলাদা থাকবে। অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব খাত সংস্কারের কথা বলে আসছেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের একটি শর্ত ছিল রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার করা।কিন্ত্ত কিধরনের সংস্কার সেবিষয়টি বরাবরই অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশা। এনবিআরের আন্দোলনকারীরা দুটি বিভাগ আলাদা করা নিয়ে তেমন আপত্তি করছেন না। তাঁরা মূলত ওই দুই বিভাগে পদায়নের ক্ষেত্রে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার চেয়েছেন।
সরকার প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এই দুই বিভাগে নিয়োগ করার আদেশ, জারীকৃত অধ্যাদেশে সন্নিবেশিত করেছেন মর্মে এই আন্দোলনের সূত্রপাত বললেন সংশ্লিষ্টরা। কারন হিসেবে দেখছেন, তারা অতীতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আচরণ ও প্রভাব বিস্তারে এক ধরনের কোনঠাসা, হয়রানী ও নাখোশ। নাম বলতে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, তারা ফ্যাসিস্টের আমলের চেয়ারম্যান ও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দ্বারা নি:গৃহীত, অপমানিত ও বদলী এবং পদায়ণের ক্ষেত্রে অর্থের লেনদেন হয়েছে বলেই তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও ঘৃনার মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য,সমগ্র বাংলাদেশে সরকারী জনবলের নিয়োগের অনুমোদিত সংখ্যা রয়েছে ১৯,১৬,৫১৯ জনের। এরমধ্যে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৮ জন। শূন্য পদ রয়েছে ৪,৭৩,০০১ টি। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের অধীন রয়েছেন বর্তমানে ১৩,৬১৯ জন।তার মধ্যে, অফিসার আছেন ৩,৪৩৪ জন এবং নন ক্যাডার ও সহযোগী রয়েছেন ১০,১৯৫ জন।মোট রাজস্ব যোদ্ধা বলা যায় ১৩,৬১৯ জন। অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ২২,১২৩ জন। যা মোট জনবলের প্রায় ১% এর কম। অথচ এরা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের ত্যাগী যোদ্ধা। তাদেরকেও দাবী আদায়ের জন্য ২ টি মাস রাস্তায় থাকতে হলো। নিপীড়নতো রয়েছেই।
আন্দোলনকারীরা এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের পদত্যাগও দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতের এ সংস্কারে তাঁদেরকে (এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারী) উপেক্ষা করছেন। উল্টো আন্দোলনকারীদের উপর দমন-নিপীড়ন করেছেন।
এমতাবস্থায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতিতে ভয়াবহ সংকট দেখা দেয়ার প্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ স্হানীয় ব্যবসায়ী মহল থেকে অর্থ উপদেষ্টা মহোদয়কে শাটডাউন প্রত্যাহারের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যবসায়ী মহল ঐক্য পরিষদকে জোরালো অনুরোধ জানায়। ব্যবসায়ী মহলের অনুরোধক্রমে ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ দেশের স্বার্থে ঘোষণাকৃত শাটডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টার মাধ্যমে ঐক্য পরিষদের নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ব্যবসায়ী মহল এর পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়- তারা ঐক্য পরিষদের পাশে আছেন এবং ন্যায়ের পক্ষে পাশে থাকবেন।
আসাদুজ্জামান রনজু
৩০ জুন, ২০২৫, 5:24 PM

ঐক্য পরিষদের নেতাদের শাটডাউন ঘোষণা কড়ায় চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান ক্ষিপ্ত হয়ে ষড়যন্ত্র মূলক এ মামলা দায়ের করেন বলে দাবি করেন ঐক্য পরিষদ সংশ্লিষ্টরা। যে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে- তারা হলেন, আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম; নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ( সভাপতি); ঢাকা-৮ কর অঞ্চলের অতিরিক্ত কমিশনার মির্জা আশিক রানা (সহ সভাপতি); ঢাকা কর অঞ্চল-১৬ অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা; ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ড এবং বিএসএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান।
তবে আন্দোলনকারী সকলের মূখে একটিই কথা, তাহলে সরকার কি ফ্যাসিস্টদের কায়দায় এগোচ্ছে?যে রকম ফ্যাসিস্ট আমলে ন্যায্য দাবী নিয়ে কথা বললেই এধরণের খড়ক দিয়ে হয়রানি করা হতো। তবে, এনবিআর সূত্র বলছে ভিন্ন কথা।
এনবিআরে সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে গত ১২মে পর থেকে আন্দোলন করছেন সকল কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। ফলে সরকারের হয়ে রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটিতে তৈরী হয়েছে এক ধরনের অচলাবস্থা। এতে ব্যবসায়ী, রাজস্ব তথা জনসাধারণের সেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে প্রতীয়মান হয়।
এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করেছিল সরকার। তাতে করে, করহার নির্ধারণ এবং কর আদায়ের কাজ আলাদা থাকবে। অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব খাত সংস্কারের কথা বলে আসছেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের একটি শর্ত ছিল রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার করা।কিন্ত্ত কিধরনের সংস্কার সেবিষয়টি বরাবরই অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশা। এনবিআরের আন্দোলনকারীরা দুটি বিভাগ আলাদা করা নিয়ে তেমন আপত্তি করছেন না। তাঁরা মূলত ওই দুই বিভাগে পদায়নের ক্ষেত্রে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার চেয়েছেন।
সরকার প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এই দুই বিভাগে নিয়োগ করার আদেশ, জারীকৃত অধ্যাদেশে সন্নিবেশিত করেছেন মর্মে এই আন্দোলনের সূত্রপাত বললেন সংশ্লিষ্টরা। কারন হিসেবে দেখছেন, তারা অতীতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আচরণ ও প্রভাব বিস্তারে এক ধরনের কোনঠাসা, হয়রানী ও নাখোশ। নাম বলতে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, তারা ফ্যাসিস্টের আমলের চেয়ারম্যান ও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দ্বারা নি:গৃহীত, অপমানিত ও বদলী এবং পদায়ণের ক্ষেত্রে অর্থের লেনদেন হয়েছে বলেই তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও ঘৃনার মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য,সমগ্র বাংলাদেশে সরকারী জনবলের নিয়োগের অনুমোদিত সংখ্যা রয়েছে ১৯,১৬,৫১৯ জনের। এরমধ্যে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৮ জন। শূন্য পদ রয়েছে ৪,৭৩,০০১ টি। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের অধীন রয়েছেন বর্তমানে ১৩,৬১৯ জন।তার মধ্যে, অফিসার আছেন ৩,৪৩৪ জন এবং নন ক্যাডার ও সহযোগী রয়েছেন ১০,১৯৫ জন।মোট রাজস্ব যোদ্ধা বলা যায় ১৩,৬১৯ জন। অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ২২,১২৩ জন। যা মোট জনবলের প্রায় ১% এর কম। অথচ এরা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের ত্যাগী যোদ্ধা। তাদেরকেও দাবী আদায়ের জন্য ২ টি মাস রাস্তায় থাকতে হলো। নিপীড়নতো রয়েছেই।
আন্দোলনকারীরা এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের পদত্যাগও দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতের এ সংস্কারে তাঁদেরকে (এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারী) উপেক্ষা করছেন। উল্টো আন্দোলনকারীদের উপর দমন-নিপীড়ন করেছেন।
এমতাবস্থায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতিতে ভয়াবহ সংকট দেখা দেয়ার প্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ স্হানীয় ব্যবসায়ী মহল থেকে অর্থ উপদেষ্টা মহোদয়কে শাটডাউন প্রত্যাহারের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যবসায়ী মহল ঐক্য পরিষদকে জোরালো অনুরোধ জানায়। ব্যবসায়ী মহলের অনুরোধক্রমে ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ দেশের স্বার্থে ঘোষণাকৃত শাটডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টার মাধ্যমে ঐক্য পরিষদের নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ব্যবসায়ী মহল এর পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়- তারা ঐক্য পরিষদের পাশে আছেন এবং ন্যায়ের পক্ষে পাশে থাকবেন।