সিএনজি চালক থেকে এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মাসুম, সমালোচনার ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ জুলাই, ২০২৫, 1:23 PM

সিএনজি চালক থেকে এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মাসুম, সমালোচনার ঝড়
জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের আঞ্জুরি কোনার বাসিন্দা সিএনজি চালক মো. মাসুম আহমেদ এখন নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন একজন সাংবাদিক হিসেবে। দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশন এশিয়ান টিভির স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন তিনি।
মাধ্যমিক পাস না করেও সাংবাদিক হয়ে ওঠার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন মহলে বিস্ময় ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ এটিকে গণমাধ্যমের অবক্ষয়ের একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাসুম এক সময় পেশাদার সিএনজি চালক হিসেবে কাজ করতেন। দীর্ঘদিন জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাসের পারিবারিক ড্রাইভার ছিলেন। পরে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি পদ লাভ করেন মাসুম। এরপর থেকেই তার জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগ নেতা হওয়ার পর মাসুম বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও সরকারি সুবিধা আদায়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। একাধিক সূত্র দাবি করে, আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে ঘর পাওয়াসহ সরকারি নানা সুবিধাও গ্রহণ করেছেন তিনি। সম্প্রতি উপজেলার সমাই বাজারে এক প্রবাসীর বাড়িতে চাঁদা দাবি করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হন মাসুম। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং প্রথম আলোসহ জাতীয় কয়েকটি গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়েও মাসুমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে আন্দোলনের ঘটনায় অন্য অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিলেও মাসুম বিভিন্ন সরকারি ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন- যা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তার এমন উত্তরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলার কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক। তারা বলেন, সাংবাদিকতা এখন কুলষিত হয়ে পড়েছে। লেখাপড়া না জানা সিএনজি চালক, রাজমিস্ত্রি কিংবা মোবাইল মেকানিকরাও এখন ২০০ টাকার কার্ড ঝুলিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। এটি একটি ভয়াবহ অবক্ষয়ের ইঙ্গিত।
উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের (২৩৫৯) সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম জানান, মাসুম দীর্ঘদিন জুড়ীতে সিএনজি চালিয়েছে। এখনো তিনি সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধিত সদস্য।
আলাপকালে একাধিক সিএনজি চালক জানান, মাসুম বেশ কয়েক বছর ধরে জুড়ীতে সিএনজি চালিয়েছেন। সিএনজি চালক থেকে কীভাবে সাংবাদিক হলেন সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। লেখাপড়া না জানা একজন সিএনজি চালক যদি দেশের স্বনামধন্য টেলিভিশনের সাংবাদিক বনে যান তাহলে সাংবাদিকতার পেশা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই।
এ বিষয়ে মাসুম আহমেদের বক্তব্য জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি যে সিএনজি চালাতাম, সেটা জুড়ীর সবাই জানে। এখন আমি সাংবাদিক সমস্যা কোথায়?
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ জুলাই, ২০২৫, 1:23 PM

জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের আঞ্জুরি কোনার বাসিন্দা সিএনজি চালক মো. মাসুম আহমেদ এখন নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন একজন সাংবাদিক হিসেবে। দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশন এশিয়ান টিভির স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন তিনি।
মাধ্যমিক পাস না করেও সাংবাদিক হয়ে ওঠার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন মহলে বিস্ময় ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ এটিকে গণমাধ্যমের অবক্ষয়ের একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাসুম এক সময় পেশাদার সিএনজি চালক হিসেবে কাজ করতেন। দীর্ঘদিন জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাসের পারিবারিক ড্রাইভার ছিলেন। পরে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি পদ লাভ করেন মাসুম। এরপর থেকেই তার জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগ নেতা হওয়ার পর মাসুম বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও সরকারি সুবিধা আদায়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। একাধিক সূত্র দাবি করে, আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে ঘর পাওয়াসহ সরকারি নানা সুবিধাও গ্রহণ করেছেন তিনি। সম্প্রতি উপজেলার সমাই বাজারে এক প্রবাসীর বাড়িতে চাঁদা দাবি করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হন মাসুম। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং প্রথম আলোসহ জাতীয় কয়েকটি গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়েও মাসুমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে আন্দোলনের ঘটনায় অন্য অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিলেও মাসুম বিভিন্ন সরকারি ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন- যা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তার এমন উত্তরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলার কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক। তারা বলেন, সাংবাদিকতা এখন কুলষিত হয়ে পড়েছে। লেখাপড়া না জানা সিএনজি চালক, রাজমিস্ত্রি কিংবা মোবাইল মেকানিকরাও এখন ২০০ টাকার কার্ড ঝুলিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। এটি একটি ভয়াবহ অবক্ষয়ের ইঙ্গিত।
উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের (২৩৫৯) সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম জানান, মাসুম দীর্ঘদিন জুড়ীতে সিএনজি চালিয়েছে। এখনো তিনি সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধিত সদস্য।
আলাপকালে একাধিক সিএনজি চালক জানান, মাসুম বেশ কয়েক বছর ধরে জুড়ীতে সিএনজি চালিয়েছেন। সিএনজি চালক থেকে কীভাবে সাংবাদিক হলেন সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। লেখাপড়া না জানা একজন সিএনজি চালক যদি দেশের স্বনামধন্য টেলিভিশনের সাংবাদিক বনে যান তাহলে সাংবাদিকতার পেশা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই।
এ বিষয়ে মাসুম আহমেদের বক্তব্য জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি যে সিএনজি চালাতাম, সেটা জুড়ীর সবাই জানে। এখন আমি সাংবাদিক সমস্যা কোথায়?