বাহরাইনের কাছে দুই গোল খেলো বাংলাদেশ

প্রভাতী খবর ডেস্ক
০৯ জুন, ২০২২, 1:03 AM
বাহরাইনের কাছে দুই গোল খেলো বাংলাদেশ
বাহরাইনের কাছে হারবে বাংলাদেশ সেটা অনুমিতই ছিল। দেখার ছিল সেই হারের ব্যবধান কেমন হয়। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর বাহরাইন বড় ব্যবধানে জিততে যাচ্ছে বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ রক্ষনটাকে আরেকটু জমাট রেখে আর গোল আদায় করতে দেয়নি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে। প্রথমার্ধে করা ২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাহরাইন।
১৯৭৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সিউলে প্রেসিডেন্ট কাপে প্রথম এবং শেষবার বাহরাইনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দলের। সেই দেখায় ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ঠিক ৪৩ বছর পর বুধবার ফের বাহরাইনের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন পর বাহরাইনের সঙ্গে এশিয়া কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে খেলতে নেমে সেই একই ব্যবধানে হেরে গেল জামাল ভূঁইয়ারা।
বুধবার কুয়ালামপুরের বুকিত জলিল ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বিকেলে ম্যাচটি শুরু হয়। এদিন বল দখল, আক্রমণ সব কিছুতেই ছিল বাহরাইনের প্রাধান্য। ৩৩ মিনিট পর্যন্ত বাংলাদেশ বাহরাইনকে রুখতে সক্ষম হয়েছিল।
বাইরাইনের সঙ্গে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্য প্রায় ১০০। গত ৫টি এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে টানা খেলা এই দলটির বাংলাদেশের বিপক্ষে সহজে জিতবে, এটাই ধরে নিয়েছিলেন সবাই।
কার্যত হয়েছেও তাই। শারীরিক শক্তি আর দক্ষতায় অনেক এগিয়ে থাকা বাইরাইন বুঝিয়ে দিয়েছে পার্থক্যটা। দুই অসম শক্তির লড়াইয়ে ফল তাই অবাক করছে না। অনুমিতভাবেই এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে বাহরাইন জিতেছে।
বাংলাদেশের গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো আবারও বারের নিচে ছিলেন বিশ্বস্ত প্রহরী। দুটি গোল তাঁর বিপক্ষে হলেও আনিসুর দলকে রক্ষা করেছেন অন্তত ৫ থেকে ৬ বার। তাঁর গোলকিপিং নজর কেড়েছে সবারই।
বাহরাইন অ্যাটাকিং থার্ডে প্রচুর পাস খেলেছে। পাসিংয়ে গোলকধাঁধায় ফেলে দেয় তারা বাংলাদেশের রক্ষণকে। তবে গোলে শট নেওয়ার মতো জায়গা বের করতে পারছিল না প্রথম ৩০ মিনিট। যে কবার বের করেছে আনিসুর ছিলেন প্রস্তুত।
৯ মিনিটে কর্নার থেকে ডিফেন্ডার মোহাম্মদ বেনাদির হেড আনিসুর আটকান দারুণভাবে। ১৪ মিনিটে আরেকটি শট আটকান। ২১ মিনিটে ডি–বক্সের একটু সামনে চেক রিপাবলিকে খেলা নাম্বার নাইন আবদুল্লাহ ইউসুফকে ফাউল করেন বিশ্বনাথ। খুব ভালো জায়গা থেকে ফ্রি–কিক পেয়েও গোল করতে পারেনি বাহরাইন। কমাইল হাসানের শট গোলকিপার ধরে নেন। পরের মিনিটে আনিসুর আরেকটি শট আটকান।
৩৪ মিনিটে কমাইল হাসানের কর্নারে কুয়েত লিগে খেলা আলী আলী হারাম দারুণ হেডে করেন ১–০।
গোলকিপার আনিসুর বুঝতেই পারেননি। নিখুঁত এক গোল। ৪২ মিনিটে মিডফিল্ডার কোমাইল আল আসওয়াদ বক্সের বাইরে থেকে দারুন এক গড়ানো শটে করে দেন ২–০।
প্রথমার্ধে প্রবল আক্রমণ সামলে সুযোগ পেলে বাংলাদেশও উঠেছে আক্রমণে। ২৬ মিনিটে জামাল ভূঁইয়া বলটা ভালোই বাড়িয়ে দেন বাঁ দিকের উইংয়ে রাকিবকে। রাকিবের ক্রস থেকে সাজ্জাদ বলের নাগাল পাননি।
বলে–পায়ে সংযোগ হলে হয়তো গোলের একটা সুযোগ থাকত। ৩০ মিনিটে বক্সের সামনে ফ্রি–কিক পায় বাংলাদেশ। জামালের ফ্রি–কিক পোস্টে বাতাস লাগিয়ে চলে যায় বাইরে।
দ্বিতীয়ার্ধে তুলনামুলক বাংলাদেশ বল পায়ে রেখেছে বেশি। প্রথমার্ধে যা একেবারেই পারেনি। ফলে বাহরাইন আরও বেশি চড়াও হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আসলে মাঠে নামার আগেই যদি প্রতিপক্ষের আক্রমণ রোখাই হয় মূল লক্ষ, তাহলে বল পায়ে না রাখতে পারাই স্বাভাবিক। এই সময় বাংলাদেশ কোচ চেয়েছিলেন ‘লো ব্লক’ করে বাহরাইনকে আটকাতে। সেটা অনেকটাই পেরেছেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে নিজেরা একটু বল চালাচালি করার ফলেই কি না, বাহরাইন এই অর্ধে কোনো গোল পায়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত বাহরাইনকে ২–০ গোলে রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটা এক ধরণের মানসিক জয়ও বাংলাদেশের। তাই ম্যাচ শেষে করতালি পেয়েছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা।
ভালো রক্ষণ করে আজ হেরেছে বাংলাদেশ, এই হারে কোনো গ্লানি নেই! তবে মাঠের খেলায় ভুল পাস, বল পায়ে রাখতে না পারার দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা জরুরি।
প্রভাতী খবর ডেস্ক
০৯ জুন, ২০২২, 1:03 AM
বাহরাইনের কাছে হারবে বাংলাদেশ সেটা অনুমিতই ছিল। দেখার ছিল সেই হারের ব্যবধান কেমন হয়। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর বাহরাইন বড় ব্যবধানে জিততে যাচ্ছে বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ রক্ষনটাকে আরেকটু জমাট রেখে আর গোল আদায় করতে দেয়নি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে। প্রথমার্ধে করা ২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাহরাইন।
১৯৭৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সিউলে প্রেসিডেন্ট কাপে প্রথম এবং শেষবার বাহরাইনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দলের। সেই দেখায় ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ঠিক ৪৩ বছর পর বুধবার ফের বাহরাইনের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন পর বাহরাইনের সঙ্গে এশিয়া কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে খেলতে নেমে সেই একই ব্যবধানে হেরে গেল জামাল ভূঁইয়ারা।
বুধবার কুয়ালামপুরের বুকিত জলিল ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বিকেলে ম্যাচটি শুরু হয়। এদিন বল দখল, আক্রমণ সব কিছুতেই ছিল বাহরাইনের প্রাধান্য। ৩৩ মিনিট পর্যন্ত বাংলাদেশ বাহরাইনকে রুখতে সক্ষম হয়েছিল।
বাইরাইনের সঙ্গে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্য প্রায় ১০০। গত ৫টি এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে টানা খেলা এই দলটির বাংলাদেশের বিপক্ষে সহজে জিতবে, এটাই ধরে নিয়েছিলেন সবাই।
কার্যত হয়েছেও তাই। শারীরিক শক্তি আর দক্ষতায় অনেক এগিয়ে থাকা বাইরাইন বুঝিয়ে দিয়েছে পার্থক্যটা। দুই অসম শক্তির লড়াইয়ে ফল তাই অবাক করছে না। অনুমিতভাবেই এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে বাহরাইন জিতেছে।
বাংলাদেশের গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো আবারও বারের নিচে ছিলেন বিশ্বস্ত প্রহরী। দুটি গোল তাঁর বিপক্ষে হলেও আনিসুর দলকে রক্ষা করেছেন অন্তত ৫ থেকে ৬ বার। তাঁর গোলকিপিং নজর কেড়েছে সবারই।
বাহরাইন অ্যাটাকিং থার্ডে প্রচুর পাস খেলেছে। পাসিংয়ে গোলকধাঁধায় ফেলে দেয় তারা বাংলাদেশের রক্ষণকে। তবে গোলে শট নেওয়ার মতো জায়গা বের করতে পারছিল না প্রথম ৩০ মিনিট। যে কবার বের করেছে আনিসুর ছিলেন প্রস্তুত।
৯ মিনিটে কর্নার থেকে ডিফেন্ডার মোহাম্মদ বেনাদির হেড আনিসুর আটকান দারুণভাবে। ১৪ মিনিটে আরেকটি শট আটকান। ২১ মিনিটে ডি–বক্সের একটু সামনে চেক রিপাবলিকে খেলা নাম্বার নাইন আবদুল্লাহ ইউসুফকে ফাউল করেন বিশ্বনাথ। খুব ভালো জায়গা থেকে ফ্রি–কিক পেয়েও গোল করতে পারেনি বাহরাইন। কমাইল হাসানের শট গোলকিপার ধরে নেন। পরের মিনিটে আনিসুর আরেকটি শট আটকান।
৩৪ মিনিটে কমাইল হাসানের কর্নারে কুয়েত লিগে খেলা আলী আলী হারাম দারুণ হেডে করেন ১–০।
গোলকিপার আনিসুর বুঝতেই পারেননি। নিখুঁত এক গোল। ৪২ মিনিটে মিডফিল্ডার কোমাইল আল আসওয়াদ বক্সের বাইরে থেকে দারুন এক গড়ানো শটে করে দেন ২–০।
প্রথমার্ধে প্রবল আক্রমণ সামলে সুযোগ পেলে বাংলাদেশও উঠেছে আক্রমণে। ২৬ মিনিটে জামাল ভূঁইয়া বলটা ভালোই বাড়িয়ে দেন বাঁ দিকের উইংয়ে রাকিবকে। রাকিবের ক্রস থেকে সাজ্জাদ বলের নাগাল পাননি।
বলে–পায়ে সংযোগ হলে হয়তো গোলের একটা সুযোগ থাকত। ৩০ মিনিটে বক্সের সামনে ফ্রি–কিক পায় বাংলাদেশ। জামালের ফ্রি–কিক পোস্টে বাতাস লাগিয়ে চলে যায় বাইরে।
দ্বিতীয়ার্ধে তুলনামুলক বাংলাদেশ বল পায়ে রেখেছে বেশি। প্রথমার্ধে যা একেবারেই পারেনি। ফলে বাহরাইন আরও বেশি চড়াও হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আসলে মাঠে নামার আগেই যদি প্রতিপক্ষের আক্রমণ রোখাই হয় মূল লক্ষ, তাহলে বল পায়ে না রাখতে পারাই স্বাভাবিক। এই সময় বাংলাদেশ কোচ চেয়েছিলেন ‘লো ব্লক’ করে বাহরাইনকে আটকাতে। সেটা অনেকটাই পেরেছেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে নিজেরা একটু বল চালাচালি করার ফলেই কি না, বাহরাইন এই অর্ধে কোনো গোল পায়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত বাহরাইনকে ২–০ গোলে রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটা এক ধরণের মানসিক জয়ও বাংলাদেশের। তাই ম্যাচ শেষে করতালি পেয়েছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা।
ভালো রক্ষণ করে আজ হেরেছে বাংলাদেশ, এই হারে কোনো গ্লানি নেই! তবে মাঠের খেলায় ভুল পাস, বল পায়ে রাখতে না পারার দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা জরুরি।