উচ্চশিক্ষিত খামারি ড. 'ড্রাগন প্রিন্স'

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ অক্টোবর, ২০২২, 1:31 AM

উচ্চশিক্ষিত খামারি ড. 'ড্রাগন প্রিন্স'
ড্রাগন ফল চাষ করে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন ড্রাগন প্রিন্স নামে। আসল নাম ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স। আবু বকরের কৃষিকাজের জন্য মোট জমির পরিমাণ প্রায় ৮ একর। এর মধ্যে ৩ একর দীর্ঘ মেয়াদে ইজারা নেওয়া। বিভিন্ন জাতের ছয় হাজার ড্রাগনগাছ রয়েছে তাঁর খামারে। নয়জন স্থায়ী শ্রমিকের পাশাপাশি সেখানে কাজ করছেন অনেক অস্থায়ী শ্রমিক। আবু বকর সিদ্দিক তাঁর নামের আগে ডক্টরেট বা শিক্ষক এসবের চেয়ে ‘শিক্ষিত কৃষক’ বলতেই বেশি পছন্দ করেন। ড্রাগন চাষের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেই পেয়েছেন ‘ড্রাগন প্রিন্স’ উপাধি।
১৩ ই মে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের বাবুলের বাজারে লতি বিক্রি করতে গিয়েছিলেন অধ্যাপক ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স। কৃষিকে মনপ্রান দিয়ে ভালবাসেন বলেই সাধারণ বিক্রেতাদের সারিতে বসে বিক্রি করায় তাৎক্ষণিক তার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রশংসা বাক্যে ভাসতে থাকেন।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রিন্স বলেন, "এটা তো আমার নিত্যনৈমেত্তিক কাজ। আমি অবাক হয়েছি মানুষ ছবি শেয়ার করছে দেখে।
তিনি আরও জানান, আমার দাদার বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুরে। বাবা ছিলেন একজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারসহ ঢাকায় আমরা আর্মি কলোনিতে থাকতাম । আমি পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছিলাম। কিন্তু কৃষির প্রতি ছোটবেলা থেকেই প্রচন্ড ভালোবাসা ছিল। আমরা ঢাকায় আর্মি কলোনিতে থাকাকালীন সময়ে মা শখ করে কিছু লাউগাছ লাগাতেন, হাঁস পালতেন। এগুলো ভালো লাগতো। এসব দৃশ্য এখনো চোখে ভাসে। ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙামাটিয়া ইউনিয়নের হাতিলেইট গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে কৃষি করতে চলে আসি। ২০১৪ সালে এখানে ৮ একর জমিতে গড়ে তুলেছি কৃষি খামার।
২০০২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এআইইউবি থেকে কৃষি ব্যবসায় এমবিএ ডিগ্রি নেন ২০০৮ সালে। এরপর ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ও ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান।
বর্তমানের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রিন্স বলেন "আমাদের কৃষিজমির সংখ্যা কমছে। অথচ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক। এ পরিস্থিতিতে অল্প স্থানে বেশি উৎপাদন করতে না পারলে ভবিষ্যতে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে। সেই চিন্তা থেকেই বাগানের কাজে হাত দিয়েছেন প্রিন্স। ফলের বাগান করার আগে প্রশিক্ষণ গ্রহণ জরুরি বলেই মনে করেন প্রিন্স। প্রশিক্ষিত একজন কৃষক সাধারণ কৃষকের চেয়ে অনেক বেশি ফসল ফলাতে পারে। আধুনিক কৃষিকাজে মেধাও প্রয়োজন। তাই শিক্ষিত তরুনদের বেশি করে কৃষিতে সম্পৃক্ত হতে হবে।"
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ , বৈশ্বিক খাদ্য সংকট ও সর্বোপরি আসন্ন দিনে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা পরিস্থিতিতে তরুনদের জন্য আবু বকর প্রিন্সই হতে পারেন আলোর মশাল হাতে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ অক্টোবর, ২০২২, 1:31 AM

ড্রাগন ফল চাষ করে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন ড্রাগন প্রিন্স নামে। আসল নাম ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স। আবু বকরের কৃষিকাজের জন্য মোট জমির পরিমাণ প্রায় ৮ একর। এর মধ্যে ৩ একর দীর্ঘ মেয়াদে ইজারা নেওয়া। বিভিন্ন জাতের ছয় হাজার ড্রাগনগাছ রয়েছে তাঁর খামারে। নয়জন স্থায়ী শ্রমিকের পাশাপাশি সেখানে কাজ করছেন অনেক অস্থায়ী শ্রমিক। আবু বকর সিদ্দিক তাঁর নামের আগে ডক্টরেট বা শিক্ষক এসবের চেয়ে ‘শিক্ষিত কৃষক’ বলতেই বেশি পছন্দ করেন। ড্রাগন চাষের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেই পেয়েছেন ‘ড্রাগন প্রিন্স’ উপাধি।
১৩ ই মে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের বাবুলের বাজারে লতি বিক্রি করতে গিয়েছিলেন অধ্যাপক ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স। কৃষিকে মনপ্রান দিয়ে ভালবাসেন বলেই সাধারণ বিক্রেতাদের সারিতে বসে বিক্রি করায় তাৎক্ষণিক তার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রশংসা বাক্যে ভাসতে থাকেন।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রিন্স বলেন, "এটা তো আমার নিত্যনৈমেত্তিক কাজ। আমি অবাক হয়েছি মানুষ ছবি শেয়ার করছে দেখে।
তিনি আরও জানান, আমার দাদার বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুরে। বাবা ছিলেন একজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারসহ ঢাকায় আমরা আর্মি কলোনিতে থাকতাম । আমি পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছিলাম। কিন্তু কৃষির প্রতি ছোটবেলা থেকেই প্রচন্ড ভালোবাসা ছিল। আমরা ঢাকায় আর্মি কলোনিতে থাকাকালীন সময়ে মা শখ করে কিছু লাউগাছ লাগাতেন, হাঁস পালতেন। এগুলো ভালো লাগতো। এসব দৃশ্য এখনো চোখে ভাসে। ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙামাটিয়া ইউনিয়নের হাতিলেইট গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে কৃষি করতে চলে আসি। ২০১৪ সালে এখানে ৮ একর জমিতে গড়ে তুলেছি কৃষি খামার।
২০০২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এআইইউবি থেকে কৃষি ব্যবসায় এমবিএ ডিগ্রি নেন ২০০৮ সালে। এরপর ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ও ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান।
বর্তমানের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রিন্স বলেন "আমাদের কৃষিজমির সংখ্যা কমছে। অথচ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক। এ পরিস্থিতিতে অল্প স্থানে বেশি উৎপাদন করতে না পারলে ভবিষ্যতে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে। সেই চিন্তা থেকেই বাগানের কাজে হাত দিয়েছেন প্রিন্স। ফলের বাগান করার আগে প্রশিক্ষণ গ্রহণ জরুরি বলেই মনে করেন প্রিন্স। প্রশিক্ষিত একজন কৃষক সাধারণ কৃষকের চেয়ে অনেক বেশি ফসল ফলাতে পারে। আধুনিক কৃষিকাজে মেধাও প্রয়োজন। তাই শিক্ষিত তরুনদের বেশি করে কৃষিতে সম্পৃক্ত হতে হবে।"
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ , বৈশ্বিক খাদ্য সংকট ও সর্বোপরি আসন্ন দিনে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা পরিস্থিতিতে তরুনদের জন্য আবু বকর প্রিন্সই হতে পারেন আলোর মশাল হাতে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ।