সীমান্তে কাঁটাতারে মিললো কৃষকের লাশ: সাত দিনেও আসেনি ফেরত

এসএম শামসুজ্জোহা
২৪ নভেম্বর, ২০২২, 12:39 AM

সীমান্তে কাঁটাতারে মিললো কৃষকের লাশ: সাত দিনেও আসেনি ফেরত
ফেনী পরশুরামের বাঁশপদুয়া সীমান্ত এলাকা থেকে নিখোঁজের তিনদিন পর বিএসএফের গুলিতে নিহত কৃষক মেজবাহ উদ্দিনের (৪৭) মরদেহ ৭ দিনেও ফেরত দেয়নি ভারতীয় সিমান্তরক্ষাকারী বাহিনী (বিএসএফ)। তাকে সিমান্ত সংলগ্ন বাঁশপদুয়া এলাকার ধানক্ষেত থেকে গত রবিবার (১৩ নভেম্বর) ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বিরুদ্ধে।
নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পরে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) সীমান্তের ওপারে ৩৭৩/২-এস ভারতীয় পিলারের বিপরীতে দেওয়া কাঁটাতারে এক ব্যক্তির মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত লাশটি কৃষক মেজবাহ উদ্দীনের। বাংলাদেশের পরশুরামের বাঁশপদুয়া সীমান্তের ৩৭৩/ ২-এস পিলারের বিপরীতে ভারতের শ্রীপুর বিএসএফের জওয়ানরা তাকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও পরে গুলি করে হত্যা করেছে। তার লাশ সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছিল। নিহতের তিন দিন আগে ওই কৃষককে বাংলাদেশ অংশের ধানক্ষেত থেকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ অভিযোগ পরিবার ও স্থানীয়দের।
যে কৃষককে বিএসএফ ধরে নিয়ে গিয়েছিল তার নাম মেজবাহ উদ্দিন। তিনি পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে। তার মরদেহ ফেরত পেতে কাঁটাতারের বেড়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে স্ত্রী, তিন কন্যা সন্তানসহ স্বজনরা। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ বাংলাদেশে ঢুকে অন্যায়ভাবে মেজবাহকে ধরে নিয়ে গেছে এবং পরে গুলি করে হত্যা করেছে। পরে তার লাশ কাঁটাতারের একশ গজ ভিতরে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেয়।
মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, গত ১৩ নভেম্বর বিকাল সাড়ে চারটার দিকে আমার স্বামী বাঁশপদুয়া গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ধান কাটতে যান। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাকে জোর করে ধরে নিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থলে তাকে কিল-ঘুষি এবং লাথি দিয়ে আঘাত ও জখম করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এরপর বিষয়টি এলাকার লোকজন ও স্থানীয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সীমান্ত ফাঁড়ি এবং পরশুরাম থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানো হয়। পরে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে মেজবাহ উদ্দিনের লাশ ভারতীয় সীমান্তের একশ গজের মধ্যে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বিজিবিকে জানায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশপদুয়া গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশের অংশে নিজের জমিতে ধান কাটছিলেন কৃষক মেজবাহ উদ্দিন। বিএসএফ-এর একটি দল সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়ে। তারা চোরাকারবারিদের না পেয়ে কৃষক মেজবাহ উদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়।
ফেনীর ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরশুরামের গুথুমা সীমান্ত ফাঁড়ি সূত্র জানায়, নিহতের লাশ হস্তান্তরের ব্যাপারে গত মঙ্গলবার বিএসএফের সঙ্গে বিজিবি’র যোগাযোগ ও পতাকা বৈঠক হয়েছে। লাশ ফেরত দেওয়া হবে বলে বৈঠকে বিএসএফ প্রতিশ্রুতি দিলেও গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশ ফেরত দেয়নি ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বিএসএফ।
পরশুরাম থানার ওসি (তদন্ত) পার্থ প্রতিম দেব জানান, সীমান্তে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী পুলিশকে খবর দেয়। যেহেতু ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা তাই বিজিবি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাশ উদ্ধার করবে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত বিএসএফ লাশ ফেরত দেয়নি। এ ব্যাপারে ফেনীর ৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্ত ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাশ হস্তান্তরের কথা রয়েছে। সম্ভবত বিএসএফ আইনি পক্রিয়া শেষ করতে পারেনি।
এসএম শামসুজ্জোহা
২৪ নভেম্বর, ২০২২, 12:39 AM

ফেনী পরশুরামের বাঁশপদুয়া সীমান্ত এলাকা থেকে নিখোঁজের তিনদিন পর বিএসএফের গুলিতে নিহত কৃষক মেজবাহ উদ্দিনের (৪৭) মরদেহ ৭ দিনেও ফেরত দেয়নি ভারতীয় সিমান্তরক্ষাকারী বাহিনী (বিএসএফ)। তাকে সিমান্ত সংলগ্ন বাঁশপদুয়া এলাকার ধানক্ষেত থেকে গত রবিবার (১৩ নভেম্বর) ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বিরুদ্ধে।
নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পরে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) সীমান্তের ওপারে ৩৭৩/২-এস ভারতীয় পিলারের বিপরীতে দেওয়া কাঁটাতারে এক ব্যক্তির মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত লাশটি কৃষক মেজবাহ উদ্দীনের। বাংলাদেশের পরশুরামের বাঁশপদুয়া সীমান্তের ৩৭৩/ ২-এস পিলারের বিপরীতে ভারতের শ্রীপুর বিএসএফের জওয়ানরা তাকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও পরে গুলি করে হত্যা করেছে। তার লাশ সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছিল। নিহতের তিন দিন আগে ওই কৃষককে বাংলাদেশ অংশের ধানক্ষেত থেকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ অভিযোগ পরিবার ও স্থানীয়দের।
যে কৃষককে বিএসএফ ধরে নিয়ে গিয়েছিল তার নাম মেজবাহ উদ্দিন। তিনি পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে। তার মরদেহ ফেরত পেতে কাঁটাতারের বেড়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে স্ত্রী, তিন কন্যা সন্তানসহ স্বজনরা। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ বাংলাদেশে ঢুকে অন্যায়ভাবে মেজবাহকে ধরে নিয়ে গেছে এবং পরে গুলি করে হত্যা করেছে। পরে তার লাশ কাঁটাতারের একশ গজ ভিতরে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেয়।
মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, গত ১৩ নভেম্বর বিকাল সাড়ে চারটার দিকে আমার স্বামী বাঁশপদুয়া গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ধান কাটতে যান। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাকে জোর করে ধরে নিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থলে তাকে কিল-ঘুষি এবং লাথি দিয়ে আঘাত ও জখম করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এরপর বিষয়টি এলাকার লোকজন ও স্থানীয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সীমান্ত ফাঁড়ি এবং পরশুরাম থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানো হয়। পরে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে মেজবাহ উদ্দিনের লাশ ভারতীয় সীমান্তের একশ গজের মধ্যে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বিজিবিকে জানায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশপদুয়া গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশের অংশে নিজের জমিতে ধান কাটছিলেন কৃষক মেজবাহ উদ্দিন। বিএসএফ-এর একটি দল সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়ে। তারা চোরাকারবারিদের না পেয়ে কৃষক মেজবাহ উদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়।
ফেনীর ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরশুরামের গুথুমা সীমান্ত ফাঁড়ি সূত্র জানায়, নিহতের লাশ হস্তান্তরের ব্যাপারে গত মঙ্গলবার বিএসএফের সঙ্গে বিজিবি’র যোগাযোগ ও পতাকা বৈঠক হয়েছে। লাশ ফেরত দেওয়া হবে বলে বৈঠকে বিএসএফ প্রতিশ্রুতি দিলেও গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশ ফেরত দেয়নি ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বিএসএফ।
পরশুরাম থানার ওসি (তদন্ত) পার্থ প্রতিম দেব জানান, সীমান্তে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী পুলিশকে খবর দেয়। যেহেতু ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা তাই বিজিবি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাশ উদ্ধার করবে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত বিএসএফ লাশ ফেরত দেয়নি। এ ব্যাপারে ফেনীর ৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্ত ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাশ হস্তান্তরের কথা রয়েছে। সম্ভবত বিএসএফ আইনি পক্রিয়া শেষ করতে পারেনি।